Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ঘটনাপুঞ্জ

প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই)-পরিচিতি


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে শিক্ষণ কার্যক্রমে যথাযথ অবদান রাখতে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নাই। প্রশিক্ষণ প্রদানের এ কাজটি যে প্রতিষ্ঠান সম্পাদন করছে সেটি হলো প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, সংক্ষেপে পিটিআই। প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষক-প্রশিক্ষণের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানা দরকার। এ ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত মাইলফলকগুলো উল্লেখযোগ্য-

 উডের ডেসপাচের সুপারিশ অনুসারে ১৮৫৪ সালে এদেশে গ্রেডেড স্কুল পদ্ধতিহয়।

 চালু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ১৯০২ সাল থেকে গুরু ট্রেনিং (জিটি) স্কুল চালু করা হয়।

  ১৯৪৪ সালে ৪৫-৫৫টি জিটি স্কুলকে প্রাইমারি ট্রেনিং (পিটি) স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়। আবার উচ্চ বিদ্যালয় সংযুক্ত নতুন কয়েকটি প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টার খোলা হয়।

  ১৯৪৯ সালে পূর্ববঙ্গ শিক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রাইমারি ট্রেনিং স্কুল ও ট্রেনিং সেন্টারের স্থলে প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়।

  ১৯৫১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে স্থাপিত বর্তমানে সরকারি পিটিআই এর সংখ্যা মোট ৬৭ টি ।

  পিটিআইতে ১৯৭৯ সাল থেকে এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট-ইন-ইডুকেশন বা সি.ইন.এড. কোর্সটি চালু করা হয়েছিল।


সি.ইন.এড. কোর্সটি পরবর্তীকালে ১৯৯২ এবং ২০০১ সালে পরিমার্জিত হয়। পরিমার্জিত কোর্সে সক্রিয় শিখন/ কর্মকেন্দ্রিক/শিশুকেন্দ্রিক শিখনের কথা বলা হলেও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুশীলনকালে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষককেন্দ্রিক শিখন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। তবে পর্যায়ক্রমে শিখনফলভিত্তিক পাঠ-পরিকল্পনাসহ উপকরণ ব্যবহারে গুরুত্ব দিয়ে শিখন শেখানো কাজ পরিচালনার কথা বলা হয়।

এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট-ইন-এডুকেশন (সি.ইন.এড. ) কোর্সটি মূলতচাকুরিরত প্রশিক্ষণবিহীন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পরিচালিত হয়। সফলতার সাথে এ প্রশিক্ষণ কোর্স শেষ করতে পারলে শিক্ষা-শিক্ষর্কী বাংলাদেশ সি.ইন.এড. বোর্ড থেকে একটি সার্টিফিকেট পান।

পিটিআই এর জনবল:

সুপারিনটেনডেন্ট-১ জন , সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট-২ জন, ইন্সট্রাক্টর সাধারণ -১২ জন, ইন্সট্রাক্টর বিজ্ঞান -১ জন, ইন্সট্রাক্টর শারীরিক শিক্ষা -১ জন, ইন্সট্রাক্টর কৃষি -১ জন, ইন্সট্রাক্টর চারু ও কারুকলা -১ জন, ইন্সট্রাক্টর কম্পিউটার সাইন্স -১ জন , পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক- ৫ জন, সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাম ক্যাটালগার -১ জন, কম্পিউটার অপারেটর-১ জন, উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক= ১ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর-২ জন, ঝাড়ুদার -১ জন, মালী-১ জন, অফিস সহায়ক-৪ জন ।  তবে নতুন ১২ টি পিটিআইতে ইন্সট্রক্টর( বিজ্ঞান, কৃষি, চারু ও কারুকলা, শারীরিক শিক্ষা , কম্পিউটার সাইন্স,) পদগুলো নেই।


ডিপিএড কোর্সের পটভূমি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁদের একাডেমিক শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশেব পঞ্চাশের দশক থেকে প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (সংক্ষেপে পিটিআই) পর্যায়ক্রমেপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং পিটিআইতে শিক্ষকদের জন্য ১ বছর মেয়াদি কোর্স চালু করা হয়। এই কোর্সটি সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন নামে পরিচিত। এক বছর মেয়াদি সার্টিফিকেট ইন (সিএডুকেশন.ইন..) কোর্সটি পরিবর্তন করে ১৮ মাস মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) প্রর্বতন করা হয় ২০১২সালে।

প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পর্যায়ে আয়োজিত কর্মশালায়-ইন-এড কোর্সসি পরিবর্তন করে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও উন্নততর কোর্স চালু করার সুপারিশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ প্রেক্ষিতে একটি জাতীয় পর্যায়ের গঠনকমিটিকরে। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে ৪ জন (আন্তর্জাতিক ও জাতীয়) পরামর্শক কোর্সটির রূপরেখা বা ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করেন। এ রূপরেখার আলোকে ডিপ্লোমা­ ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপি-এরড)৭টি কোর্সের কোর্স সামগ্রী (তথ্য পুস্তক ও ইনস্ট্রাক্টর নির্দেশনা) এবং কোর্সটি পরিচালনার জন্য ৫টিগাইড বুক ও বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণের জন্য তথ্যপুস্তকসহ ম্যানুয়াল তৈরি করা হয়।

২০১২ সালে ৭টি পিটিআইতে পরীক্ষামূলক চালু করে, ২০১৩ সালে আরো ২২টি পিটিআইতে, ২০১৪ সালে ৩৬টি পিটিআইতে এবং ২০১৫ সালে  ৫০টি পিটিআইতে চালু করা হয়। ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে সকল পিটিআইতে ডিপিএড কোর্স চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৬৭ টি পিটিআইতে ডিপিএড কোর্স চালু রয়েছে।  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একাধিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।


ডিপিএড কোর্সের বৈশিষ্ট্য

ডিপিএড কোর্সে ভর্তির জন্য প্রাক-থমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য সর্ব নিম্নশিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক।

ডিপ্লোমা কোর্সের  সার্টিফিকেট প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নেপ।

কোর্সটির মেয়াদ : ১৮ মাস।

• ২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে জুলাইয়ের পরিবর্তে জানুয়ারি মাস হতে কোর্সটির শিক্ষাবর্ষ শুরু করা হয়েছে।

• কোর্সটির ক্রেডিট ঘণ্টা : ৯৬। এর মধ্যে পিটিআইতে ৪৭.৫ এবং বিদ্যালয়ে ৪৮.৫ ক্রেডিট ঘণ্টা।

•  এই কোর্সে পিটিআইতে ২০ সপ্তাহ তাত্বিক শিক্ষাদান এবং প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ে ১৬ সপ্তাহ অনুশীলন কার্যক্রমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

•  ১৮ মাসের শেষ ১৬ সপ্তাহ নিজ বিদ্যালয়ে পাঠদান অনুশীলন এবং চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য ২ সপ্তাহ পিটিআইতে অবস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

•  মূল্যায়নের জন্য শিক্ষকমান মূল্যায়নসহ গাঠনিক ও সামষ্টিক (লিখিত পরীক্ষা) মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

•  ডিপিএড কোর্সটি পরিচালনার জন্য প্রতিটি পিটিআইতে ১৬ জন ইনস্ট্রাক্টর এবং ৬টি শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।

•  ডিপিএড কোর্সটিতে প্রশিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত ১:৪০ সুপারিশ করা হয়েছে।

•  এই কোর্সটি সম্পূর্ণরূপে আবাসিক (যদিও বর্তমানে হোটেলে আবাসন সুবিধার অসুবিধার কারণে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে আবাসিক সুবিধার বাইরে রাখা হয়।)